আজ বুধবার, ১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বই মেলার উদ্বোধন বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ, প্রধানমন্ত্রী

বই মেলার উদ্বোধন

বই মেলার উদ্বোধন বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ, প্রধানমন্ত্রীবই মেলার উদ্বোধন

নবকুমার:

বই মেলা এখন পরিণত হয়েছে বাঙালির প্রাণের উৎসবে। পৃথিবীর বহু দেশে মেলা হয়, কিন্তু এতটা আবেগ আর কোনো মেলাকেই স্পর্শ করে না। শুধু তাই নয়, আয়োজন মাসব্যাপী হওয়ায় এই বইমেলাই দীর্ঘতম বইমেলা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমিতে মাসব্যাপী অমর একুশের গ্রন্থমেলা’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।

এ সময় তিনি বলেন, অশুভ পথে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা কখনো সংস্কৃতি ও ভাষা চর্চা করতে জানে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক, বাংলাদেশ হবে শান্তিপূর্ণ। যে বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষ তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। বিভিন্ন ভাষাভাষী যেসব মানুষ আছে, তারাও স্বাধীনভাবে তাদের ভাষা চর্চা করতে পারবে। তিনি বলেন, নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা, শিল্প-সাহিত্যকে যদি আমরা মর্যাদা না পারি এবং উৎকর্ষ সাধন করতে না পারি, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা কখনো আরও উন্নত হতে পারব না।

বইমেলা অনেক লেখক-পাঠক তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়, এই বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী লেখক, পাঠক এবং পরিবেশক সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বইমেলার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করে ভাষার চর্চা বাড়ানোর আহ্বান জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমির প্রশংসাও করেন।

বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়, সেটাই আমরা চাই। আমরা যখন সরকার গঠন করেছি, তখনই আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের ঐতিহ্যগুলো ধরে রাখার জন্য। তিনি বলেন, আমাদের এখানে বইমেলা হয়। মনে রাখতে হবে—বইমেলা শুধু বই কেনাবেচার জন্য নয়। বইমেলা সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্র প্রসারিত করে, অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয়। এ জন্যই আমরা বইমেলাকে প্রাণের মেলা বলি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাই আমি চাই প্রতিটি বাঙালি সব সময় মাথা উঁচু করে চলবে, কারও কাছে মাথা নত করবে না। আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে আমরা দেশকে গড়ে তুলব। ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। বাঙালি জাতিকে একটি শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তুলব। শিক্ষিত জাতি ছাড়া দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এ কারণে আমরা শুধু বিনা পয়সায় বই দেই না, বই উৎসব করি যেন শিক্ষার্থীরা বই পেয়ে খুশি হয়। বইয়ের প্রতি যেন ছোটবেলা থেকে আকর্ষণ বাড়ে, সে জন্য বই উৎসব করা হয়। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। বাঙালি জাতিকে আর কেউ কখনো পরাজিত করতে পারবে না। আমরা আজকে মাথা উঁচু করে চলতে শিখেছি, ইনশা আল্লাহ আমরা মাথা উঁচু করে চলব।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ভাষণের বিদেশি ভাষায় অনুবাদের তথ্য দেন। তিনি বলেন, সাতই মার্চের ভাষণ ইতিমধ্যে ১২টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ইংরেজি, আরবি, উর্দু, হিন্দি, চীন, জাপানি, ফ্রান্স এবং রাশিয়ার ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়া জার্মান, পর্তুগিজ ও স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে।

এই অনুবাদের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাস বাইরের মানুষ জানতে পারছে। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষাকে নিয়ে গেছেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। আর বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্ব সভায় আমাদের আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিয়ে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ